আলোকিত সকাল ডেস্ক
ইস্টার সানডের দিন শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলার ঘটনায় নিরাপত্তার ত্রুটি বিষয়ে দেশটির গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান সিসিরা মেনডিসকে বরখাস্ত করেছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। এরই সঙ্গে সংসদীয় তদন্ত কমিটিকে আর কোনো ধরনের সহায়তা না করার ঘোষণাও দেন তিনি। শনিবার (৮ জুন) দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান। এর আগে ২১ এপ্রিল হামলার ঘটনার বিষয়ে শুক্রবার একটি জরুরি সম্মেলন করেন প্রেসিডেন্ট।
তদন্ত চলাকালীন গত সপ্তাহে গোয়েন্দা প্রধান বলেছিলেন, তিনটি হোটেল আর তিনটি গির্জায় হামলার জন্য যারা বোমা বহন করে নিয়ে এসেছিল তাদের চিহ্নিত করতে প্রেসিডেন্ট ব্যর্থ হয়েছেন। চাইলে এ হামলা প্রতিরোধ করা সম্ভব হত। এ বক্তব্যের জেরে তাকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়।
তবে তাকে বরখাস্তের ব্যাপারে সিরিসেনার অফিস থেকে কোনো বক্তব্য জানানো হয়নি। এই স্বীকারোক্তি চলাকালীন মাঝপথেই লাইভ টেলিকাস্ট বন্ধ করে দেয়া হয় বলে এক সূত্র জানায়। একটি পরিদর্শক সূত্রে জানা যায়, প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা কোনো পুলিশ, সামরিক বা গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে কমিটির সামনে সাক্ষ্য দেওয়ার অনুমতি দেননি। সূত্র আরও জানায়, সংসদ তদন্ত স্থগিত করা হবে কিনা তা নিয়ে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত ছাড়াই উত্তপ্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকে সমাপ্তি টানা হয়।
এদিকে বৈঠকে সিরসেনার কার্যালয় কোনো মন্তব্য করেনি, তবে রাষ্ট্রপতি শুক্রবার সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তাদের বলেন যে তিনি কোনও পরিচারক কর্মকর্তাকে সাক্ষ্য দেওয়ার অনুমতি দেবেন না। এ ঘটনায় সিরসেনের প্রতিরক্ষা সচিব ও পুলিশ প্রধান বলেন, প্রেসিডেন্ট-যিনি এক সময় প্রতিরক্ষা মন্ত্রীও ছিলেন, ইস্টার সানডে হামলা মোকাবিলার জন্য গোয়েন্দাদের সতর্কতার বিষয়টি নিয়ে তিনি আসলে সঠিক নিয়ম মানেননি।
বিষয়টি এখন আলোচনার মুখ্যে থাকলেও সিরিসেনা বারবার বলছেন এ ঘটনার সাথে কোনোভাবেই তিনি জড়িত ছিলেন না। স্থানীয় একটি জিহাদী সংস্থা এবং আইএসআইএস এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। হামলার ঘটনার পরপরই দেশটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। গত সপ্তাহে সিরিসেনা আরও বলেছিলেন, ঘটনার ১৩ দিন আগেই তিনি পুলিশ প্রধানসহ শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের সাথে দেখা করেছিলেন কিন্তু কেউ এই হামলার বিষয়ে কোনও ধরনের পূর্বাভাস দেয়নি। হামলার আগে তৎপর থাকার বিষয়ে গোয়েন্দা বিভাগের অপাগরতার বিষয়ে দায় স্বীকার করেছে শ্রীলঙ্কান সরকার। এ ঘটনার পরপরই পুলিশ প্রধান পুজিথ জয়াসুন্দরকে বরখাস্ত করা হয়।
প্রসঙ্গত, ২১ এপ্রিল শ্রীলঙ্কার তিনটি চার্চ এবং এবং তিনটি হোটেলে পরপর বোমা হামলা হয়। এ হামলায় মারা যান ২৫৮ জন মানুষ, যাদের মধ্যে ৪৫ জন বিদেশি। আহত হন অন্তত ৫০০ জন। ভয়াবহ এ হামলার পরেই দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। হামলার দায় স্বীকার করে স্থানীয় একটি জিহাদী সংস্থা এবং আইএস।
আস/এসআইসু