আলোকিত সকাল ডেস্ক
জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বুদ্ধপূর্ণিমাকে ঘিরে কক্সবাজারের ১৪৭টি বৌদ্ধমন্দিরে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (১৭ মে) থেকে জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের লোকজনের সমন্বয়ে মন্দিরভিত্তিক নিরাপত্তা কমিটির কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছেন।
বুদ্ধপূর্ণিমা ঘিরে সম্প্রতি ইসলামিক স্টেট (আইএস) কিংবা জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের বৌদ্ধমন্দির ও ধর্মীয় স্থাপনাগুলোতে আত্মঘাতী হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছে, এমন তথ্য জানিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (আইবি) বাংলাদেশ সরকারকে সতর্কবার্তা জানানোর পর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরাপত্তামূলক এ ব্যবস্থা নিয়েছে।
এই কমিটির সমন্বয়ে রাখাইন ও চাকমাসহ বিভিন্ন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ১৪৭টি মন্দিরে তিন স্তরের নিরাপত্তাবলয়ে এ ধর্মীয় উৎসব উদ্যাপন করা হবে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, ‘জঙ্গি হামলার আশঙ্কার তথ্য জানিয়ে পুলিশের সদর দফতর থেকে নিরাপত্তাব্যবস্থা নিতে জেলা পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়নে তৎপরতা শুরু করেছি আমরা।’
তিনি আরও জানান, এ নিয়ে গত মঙ্গলবার জেলার বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি ও নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। এতে বৌদ্ধ মন্দির ও অনুষ্ঠানস্থলকে ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষ্যে প্রতিটি মন্দিরে পুলিশ, আনসার, কমিউনিটি পুলিশ ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজনের সমন্বয়ে একটি নিরাপত্তা কমিটি গঠন করা হয়েছে। র্যাব ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও বাড়তি নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন।
জেলা পুলিশের একটি মনিটরিং সেলও নিরাপত্তার বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখবে বলে জানিয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসাইন বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুর কারণে কক্সবাজার এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাপক পরিচিত। তাই বুদ্ধপূর্ণিমার দিন যাতে কোনো ধরনের নিরাপত্তার ঘাটতি না হয়, জেলা পুলিশ এ ব্যাপারে ব্যাপক নজরদারি করবে।
শুধু নিরাপত্তাকর্মীরা নয়, বুদ্ধপূর্ণিমায় মন্দিরগামী পূজারিদেরও ব্যক্তিগতভাবে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে বলে উল্লেখ করে বৌদ্ধ নেতাদের অনেকেই বলেন, বুদ্ধপূর্ণিমার দিন ছাড়াও জেলার ৪টি গুরুত্বপূর্ণ মন্দিরে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা জোরদারে ৪টি সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়েছে পুলিশ। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপের পর স্ব স্ব মন্দির ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছে তা হস্তান্তর করা হবে।
বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি রবীন্দ্র বড়ুয়া বলেন, জেলায় বড়ুয়া, রাখাইন, চাকমাসহ বিভিন্ন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মোট ১৪৭টি মন্দির রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রতিটি বৌদ্ধমন্দিরকেন্দ্রিক গঠিত নিরাপত্তা কমিটির সদস্যদের নিয়ে আলাদা সভা করা হয়েছে। এতে বুদ্ধপূর্ণিমার দিন কীভাবে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তার ছকও নির্ধারণ করা হয়েছে।
আস/এসআইসু