আলোকিত সকাল ডেস্ক
বরগুনায় রিফাত শরীফ হত্যার নেপথ্য কারণ হিসেবে সন্ত্রাসীদের রাজনৈতিক প্রশ্রয় ও মাদক ব্যবসাকে দায়ী করা হয়েছে জেলার মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় বৈঠকে। বৈঠক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
বুধবার (২৪ জুলাই) বরগুনায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লার সভাপতিত্বে সকাল ১০টায় এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ড ও মাদকের বিষয়টি প্রধান্য পায়। এছাড়া এই বছরের শুরুর দিকে যুবলীগ নেতা বাদশা হত্যার বিষয়টিও উঠে আসে। বাদশা হত্যা মামলার একজন আসামি ছাড়া অন্য আসামি ধরা না পরায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। সভায় ছেলেধরা গুজব ও পদ্মাসেতুর প্রসঙ্গেও আলোচনা হয়েছে।
সভায় উপস্থিত বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ‘মাদক পাচারের রুট এখন বরগুনা, সমুদ্র মাছ ধরার ট্রলার গুলোতে মাদক আসে, আপনারা একটু সজাগ হন। তাহলে মাদক আসা বন্ধ হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পাথরঘাটা, ফকিরহাট, গোড়াপদ্মায় টোকেন দেওয়া হয়। কারা দেন তা খতিয়ে দেখেন।’
রিফাত শরীফ হত্যাকান্ডের বিষয় নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মোতালেব মৃধা বলেন, ‘বরগুনায় যে ঘটনা ঘটেছে, তার পেছনে মাদকের কারণ রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই মাদকের পেছনে আশ্রয়দাতা যেই হোক, সে যদি আমার ছেলে, জাহাঙ্গীর কবিরের ছেলে বা ধীরেন্দ্র দেবনাথ শুম্ভুর ছেলে হয়, তাদেরও ছাড় দেওয়া সুযোগ নেই। এই নয়ন বন্ড একদিনে তৈরি হয়নি।’ নয়ন বন্ডদের আশ্রয়দাতাদের আইনের আওতায় আনার দাবি করেন তিনি।
যুবলীগ নেতা বাদশা হত্যা মামলার আসামি ধরা না পড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মোতালেব মৃধা। বাংলাদেশের সমুদ্র সীমায় বিদেশি ট্রলার যাতে না আসতে পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহলের পরিধি বাড়ানোর দাবিও করেন তিনি। এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘অন্য দেশের ট্রলারগুলা যদি না আসতে পারে, তাহলে এই ইয়াবাও আসবে না।’
মুক্তিযোদ্ধা আবদুল রশিদ বলেন, ‘রিফাত শরীফ ও নয়ন বন্ডরা একই গ্রুপের, তারা নিজেরা নিজেরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তারা এই শহরের অনেক ছেলেকে নষ্ট পথে নিয়ে গেছে।’
বরগুনা জেলা (ডিএসবি) পরির্দশক এনামুল হক বলেন, ‘বরগুনা ও পটুয়াখালীকে মাদক কারবারের নিরাপদ জোন হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। মাদকের বড় কারবারিরা এই অঞ্চলকে নিরাপদ জোন হিসেবে ব্যবহার করছে।’ টেকনাফ এলাকায় মাদকের অভিযান চলায় মাদক ব্যবসায়ীরা এই পথ ব্যবহার করছে বলেও দাবি করেন তিনি ।
লোক বেতারের স্টেশন ম্যানেজার মনির হোসেন বলেন, ‘রিফাত শরীফ হত্যার পরে শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো ছিল, কিন্তু মঙ্গলবার আবারও সেই পুরানো চিত্র দেখা গেছে, গত রাতে বরগুনা কলেজ সড়কে কোনও পুলিশি চেকপোস্ট ছিল না। কিশোর বয়সের ছেলেরা কলেজ সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।’ তিনি বরগুনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অভিভাবক সমাবেশ করার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে দাবি জানান।
বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি চিত্তরঞ্জন বলেন, ‘বরগুনায় কিশোর গ্রুপ গড়ে উঠছে।’
সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাহবুব আলম , জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনসহ সরকারি দফতরের কর্মকর্তা ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আস/এসআইসু