আলোকিত সকাল ডেস্ক
সুনামগঞ্জের টাংগুয়ার হাওরে অবাধে নিষিদ্ধ কোনাজাল দিয়ে পোনামাছ নিধন হচ্ছে, যেন দেখার কেউ নেই।নিষিদ্ধ কোনাজাল দিয়ে অবাধে পোনামাছ নিধনের ফলে হাওরের মাছের বংশ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এমনিতেই এবার হাওরে মাছের প্রজনন মৌসুমে পানি কম থাকায় মাছের উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাও আবার অবাধে নিষিদ্ধ কোনাজাল দিয়ে, ধরা হচ্ছে পোনা মাছ।
(২৫ জুলাই) বৃহস্পতিবার সরেজমিনে টাংগুয়ার হাওরের সীমান্তবর্তী এলাকার,ইন্দ্রপুর, বিনোদপুর, রুপনগর এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, হাওরের কিনারায় কিনারায় সংঘবদ্ধ হয়ে দশ-পনেরোটি কোনাজাল দিয়ে অবাধে মাছ ধরছে,। স্থানীয়দের কাছে আলাপচারিতার মাধ্যমে জানাযায়, জেলেরা টাংগুয়ার হাওর সংলগ্ন, মন্দিয়াতা, মইয়াজুরী, বিনোদপুর, রূপনগর, ইছামারী, সহ শ্রীপুর বাজার পার্শ্ববর্তী কালাশ্রীপুর এবং তেলিগাওসহ বিভিন্ন গ্রামের। তাদের মধ্যে অনেকেই মৌসুমী মৎস্যজীবী। বর্ষায় ছয়মাস তারা কোনাজাল দিয়ে হাওরে মাছ ধরেন। উনারা জানাযায় এই জাল টির ছিদ্র মশারির ছিদ্রের চেয়েও অনেকটাই ছোট হওয়ায় একেবারে মাছের ছোট্ট পোনাটিও ওঠে আসে। অনেক সময় মাছের ডিমও আটকা পড়ে যায় জালে। এছাড়াও মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্যসুত্রে জানাযায়, কোনাজাল নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের চেয়ে বেশি ক্ষতিকর । হাওরে পানির নিচে মাটির সঙ্গে মিশে থাকা এমনকি বন-ঘাসের কোনায় লুকিয়ে থাকা ছোট মাছটি পর্যন্ত এই জাল টেনে তুলে আনতে পারে বলে, স্থানীয়ভাবে এটি কোনাজাল হিসেবে পরিচিত।
একাধিক মৎস্যজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানাযায়, কোনা জাল ২শত থেকে ২শত ৫০ হাত পর্যন্ত লম্বা হয়। একটি জালের দাম ৫০,হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা। ৮থেকে ১০জন মৎস্যজীবী একত্রিত হয়ে একটি জাল কিনে, এবং একাধিক কোনাজাল সংঘবদ্ধ হয়ে হাওরে মাছ ধরতে যায় ।এই জাল বেশ কিছু জায়গাজুড়ে পানিতে ফেলে, আস্তে আস্তে দুই পাশ থেকে টেনে এক গুটিয়ে এনে মাছ তোলা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিষিদ্ধ এই কোনাজালের ব্যবহার শুধ টাংগুয়ার হাওরেই নয়, উপজেলার প্রায় সব হাওরেই কম বেশি চলছে।তাহিরপুর উপজেলার শনির হাওর, মাটিয়ান হাওরসহ উপজেলার বিভিন্ন হাওরে মাছ ধরতে জেলেরা কোনাজাল ব্যবহার করছেন।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তারা সারোয়ার হোসেন বলেন আমারা মৎস্য সপ্তাহে,মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে বিভিন্ন হাওর ও বাজার থেকে কোনাজাল, কারেন্টজাল জব্দ করে ধ্বংস করেছি ।বাজেট পর্যাপ্ত না থাকায় আমাদের পক্ষে প্রতিদিন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা সম্ভব নয়, তবে এই বিষয়টি আমাদের নজরদারীতে রয়েছে।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা বলেন, এই আসলে প্রশাসনের নজরদারি ও জনসচেতনতার খুব প্রয়োজন, এ ব্যাপারে আমরা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করিব।
এ বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি মোবাই ফোনটি বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
আস/এসআইসু