করোনায় রায়পুরে কোরবাণীর পশু বিক্রয় নিয়ে প্রশাসনের পদক্ষেপে জনসাধারণের ক্ষোভ”
রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি ।।
আগামী ১ আগষ্ট মুসলমানদের মহা উৎসবের দিন পবিত্র ঈদুল আযহা বা কোরবাণী ঈদ। তবে মহামারী করোনার কারনে কোরবাণীর পশুর হাট নিয়ে আতঙ্ক বিড়াজ করছে সরকার সহ সাধারণ মানুষের মাঝে। বিত্তবানদের জন্য যেমন কোরবাণী দেওয়া ওয়াজিব তেমনি গরীবরাও এদিন বিত্তবানদের দেওয়া মাংস পেয়ে বেশ খুশি থাকেন।
এবারের করোনা মহামারীর কারোনে কোরবাণী পশুর হাট নিয়ে শঙ্কায় স্বাস্থ্যবিধি। পশুর হাটের জনসমাগম নিয়েও দুঃশ্চিন্তায় সরকার ও জনসাধারণ। তাই এবছর অনলাইনে কোরবাণীর পশু ক্রয় বিক্রয়ে বেশ সাড়া পড়েছে।
করোনা সংক্রামণ রোধে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে প্রশাসন সারা দেশের ন্যায় এবছর কোরবাণীর পশুর হাটের সংখ্যা সীমিত করেছে। তবে এনিয়ে জনসাধারণের রয়েছে ভিন্নমত। তাদের ভাষ্য, কোরবাণীর পশুর হাটের সংখ্যা কম হলে হাটে ক্রেতার সমাগম বেশী হবে। আর হাটের সংখ্যা বেশী হলে ক্রেতারা বিভিন্ন হাটে বিভক্ত হয়ে যাবে এবং হাটে কিছুটা হলেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হবে। তাছাড়া বিভিন্ন মৌসুমী পশু ব্যবসায়ীরা যদি তাদের স্ব-স্ব স্থানে পশু রেখে বিক্রয় করে তাতেও হাটে জন সমাগম কমবে।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে, হাট কর্তৃপক্ষের হাসিলের টাকার স্বার্থে পশু ব্যবসায়ীদের হাট ছাড়া অনত্র পশু রাখা ও বিক্রয় নিষিদ্ধ ঘোষণা করে মাইকিং করেছেন উপজেলা প্রশাসন। যা সাধারণ মানুষের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি করেছে।
রায়পুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাজী মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, করোনা স্বাস্থ্যবিধি রক্ষার্থে মৌসুমী পশু ব্যবসায়ীরা নিজ নিজ স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশু রেখে বিক্রয় করলে হাটে পশু ও ক্রেতাদের উপস্থিতি কম হবে এবং তাতে করোনা সংক্রমনের ভয়ও কম থাকবে। এ বিষয়ে প্রশাসনকে পুনঃবিবেচনার আহবান জানান তিনি।
পৌর ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সিরাজ মিয়া বলেন, আমার বাড়ির কাছাকাছি এক মৌসুমী ব্যবসায়ী প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও ২৪টি গরু এনেছেন বিক্রির জন্য। এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে তিনি সেগুলি রেখেছেন। আর যেসব ক্রেতা সেগুলি দেখতে আসছেন তারাও সামাজিক দূরুত্ব বজায় রেখে সেগুলি দেখছেন ও দরদাম করছেন। আমার মনেহয় ব্যাপারী ছাড়া এসব মৌসুমী ব্যবসায়ীদের পশুগুলি হাটে না নিয়ে নিজ নিজ স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিক্রি করাটাই উত্তোম হবে। এটা বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারনে আলোড়িত ও সমাদৃত অনলাইন পশু বেচাকেনার মতই অনেকটা। প্রশাসনের উচিৎ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা।
৬নং কেরোয়া ইউপির সুনামগঞ্জ বাজারের সফিক পাটোয়ারী বলেন, প্রশাসনের সিদ্ধান্তটা বোধহয় সঠিক হয়নি। করোনা সংক্রমন রোধে প্রয়োজন সামিজিক দূরুত্ব। আর তাই এবছর প্রয়োজন ছিল আরো বেশী পরিমাণ পশুর হাট। প্রতিটি ইউনিয়নেই দু’চারটি হাট বসানো উচিৎ ছিল। কারন ছড়িয়ে ছিটিয়ে হাটের সংখ্যা বেশী থাকলে লোক সমাগম কম হবে। আর হাটের সংখ্যা কম হলে সীমিত হাটগুলোতে ক্রেতাদের সংখ্যা অনেক বেশী হবে এটাই স্বাভাবিক কথা। তাছাড়া স্থানীয় ব্যবসায়ীরা নিজ নিজ নিরাপদ স্থানে রেখে ও ব্যাপারীরা হাটে পশু রেখে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়াটাই বোধহয় অনেক শ্রেয়।
এব্যাপারে রায়পুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবরীন চৌধুরীর বক্তব্য জানার জন্য মোবাইল ফোনে বার বার চেষ্টা করলেও উনি কল রিসিভ করেননি।
Facebook Comments Box