রায়পুর প্রতিনিধি।।লক্ষ্মীপুরের রায়পুর পৌরসভার আসন্ন ভোটে কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রার্থীতে আপত্তি আ.লীগের কাউন্সিলর প্রার্থীদের।
দলের শীর্ষ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আসন্ন রায়পুর পৌরসভা নির্বাচনে ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে কোন দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া হয়নি। দলের জেলা, উপজেলা ও পৌর নেতারা এতোদিন বলেছেন, যেহেতু কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার সুযোগ নেই, তাই এ পদে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ারও কোনো সুযোগ নেই। এ অবস্থায় কাউন্সিলর পদে সবাইকে ‘ওপেন’ নির্বাচন করতে সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
রবিবার (৭ ফেব্রুয়ারী) রাতে রায়পুরস্থ জেলা পরিষদ ডাকবাংলায় আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনের বিষয়ে কেন্দ্রীয়, জেলা, উপজেলা ও পৌর নেতৃবৃন্দের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক হারুনুর রশিদ, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুননাহার লাইলী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মিয়া মোহাম্মদ গোলাম ফারুক পিংকু, সাধারণ সম্পাদক এড. নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন, যুবলীগ কেন্দ্রীয় উপ-পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক শামছুল ইসলাম পাটোয়ারী সহ জেলা, উপজেলা ও পৌর আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সভায় উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ প্রতিটি ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগের একজন প্রার্থী ঘোষণা করার প্রস্তাব করিলে সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান মেয়র হাজী ইসমাইল খোকন এর বিরোধীতা করে বলেন, আওয়ামীলীগের একক প্রার্থী ঘোষণা করা হলে গতবারের মত এবারও আবার মনোনয়ন বাণিজ্য হবে। তিনি এ প্রস্তাবের বিরোধীতা ও প্রতিবাদ করেন। সভায় উপস্থিত সকলে মেয়র খোকনের বক্তব্যকে সমর্থন ও সাধুবাদ জানান। উল্লেখ্য, রায়পুরে গত পৌর ও ইউপি নির্বাচনে কোটি টাকার মনোনয়ন বাণিজ্য হয়েছিল। যা স্থানীয়ভাবে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সহ ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছিল। আজ বিকেল ৩টায় পুনরায় লক্ষ্মীপুর জেলায় সভা আহবান করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, রায়পুর পৌর নির্বাচনে প্রতিটি ওয়ার্ডেই হেভীওয়েট একাধিক প্রার্থী রয়েছে। দলের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গরা বলেন, যেহেতু কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার সুযোগ নেই, তাই এ পদে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ারও কোনো সুযোগ নেই। আর বাণিজ্যের কারনে এটা করলে দলের তৃণমূলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিবে। রায়পুরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ইভিএম পদ্ধতিতে। সরকারের ইভিএম পদ্ধতি জনগণের কাছে গ্রহনযোগ্য করতে এবং ভোটের বিষয়ে মানুষের আস্থা অর্জন কাউন্সিলরদের ব্যাপক অংশগ্রহন প্রয়োজন। কারন ইভিএম এ ভোট কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিত না করতে পারলে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের বিষয়ে ব্যার্থতার প্রমান হবে। স্থানীয় পর্যায়ের সামান্য এ ভোটে সরকার স্বচ্ছতার প্রমাণ রাখতে না পারলে সরকারের পর্বত সমতুল্য উন্নয়ন ব্যর্থতায় পর্যভূষিত হবে।
রায়পুরের সর্বস্তরের মানুষ কাউন্সিলর পদে মনোনয়ন বাণিজ্যের লোভলালসা পরিত্যাগ করে আওয়ামীলীগের সকল প্রার্থীকে “ওপেন” সুযোগ দিয়ে তাদের যোগ্যতার প্রমানের সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ার আহবান জানান কেন্দ্রীয়, জেলা, উপজেলা ও পৌর নেতৃবৃন্দের প্রতি। আর দলীয় একক প্রার্থী ঘোষণা দলের গঠনতন্ত্র বিরোধী হবে, যা হবে দলের জন্য ক্ষতিকর।
তাছাড়া কিছুদিন পূর্বে অনুষ্ঠিত জেলা আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভায় ভার্চ্যুয়াল বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়াদুল কাদের অতীতে জেলায় মনোনয়ন বাণিজ্যের তীব্র প্রতিবাদ ও সমালোচনা করে ভাবিষ্যতে সকল প্রকার মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধের বিষয়ে কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারন করেছিলেন।
কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রার্থীতে আপত্তি আ.লীগের কাউন্সিলর প্রার্থীদের
Facebook Comments